বুধবার; মার্চ, ১৬, ২০২২ ইং
শফিয়ার রহমান
ইসলামের ইতিহাসে মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য বরকতময় রাত হচ্ছে শবে বরাদ, যা ভাগ্য রজনীর রাত বলাও যেতে পারে । এটি এমন একটি রাত যা হাজার হাজর রাতের চেয়েও উত্তম। এই রাতে কোন বান্দা যদি মুক্ত ভাবে আনন্দের সাথে সারারাত দাড়িয়ে সালাত আদায়ের মধ্য দিয়ে আল্লাহর কাছে পানাহ চায় তাহলে সাথে সাথে তার দোয়া কবুল করেন এবং পূর্বের সকল পাপরাশি নিজগুণে ক্ষমা করে দেন। এই রাতে আছে রহমত,এই রাতে আছে বরকত, এই রাতে আছে ফজিলত, এই রাতে আছে ভাগ্য পরিবর্তনের উপায়। রমজানের পূর্ব মহূর্তে এই রাত মুসলমানদের জন্য এক সঠিক পথের দিশা। অত্যাচার,জুলুম, নির্যাতনে
হানাহানি মারামারি পাপাচারে ভরে গেছে এই ছোট্ট ভূখণ্ড। তাইতো এতো এতো আল্লাহর দেয়া আজাব আর গজব হয়েই থাকে। কোন মা চায়না তার সন্তান অন্ধকারের ঘোর আধারে নিমজ্জিত হোক।ঠিক তেমনি আল্লাহ তায়ালা চায়না তার বান্দাগুলো ঐ সকল পথে যাক যে পথে গিয়েছিল নমরুদ,গিয়েছিল ফেরাউন। এই রজনী তে আল্লাহ তায়ালা বান্দার আকুতি মিনতি সোনার জন্য উর্ধ্ব গগন থেকে প্রথম আসমানে নেমে আসেন । আল্লাহ তায়ালা যুওে যুগে অনেক নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন। তার মধ্যে মুসলমান জাতির হেদায়তের জন্য হযরত মুহাম্মাদ সাঃ কে আলোক বর্তিকা হিসাবে প্রেরণ করেছেন। এই রাতে স্বরণ কারিয়ে দেয় হযরত মুহাম্মাদ সাঃ এর মিরাজের ঘটনাকে। মূলত হযরত মুহাম্মাদ সাঃ আল্লাহর সাথে দিদার করার জন্যই মিরাজে গমন করেন। মিরাজের রাতের শিক্ষা জড়িযে থাকুক আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলার পাথে। তার জীবনের আদর্শ জড়িযে থাকুক আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। নবিজির মিরাজ সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে….. তার মধ্য থেকে একটি
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মিরাজের রাতে আমি মূসা (‘আঃ)-এর দেখা পেয়েছি। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূসা (‘আঃ)-এর আকৃতি বর্ণনা করেছেন। মূসা (‘আঃ) একজন দীর্ঘদেহধারী, মাথায় কোঁকড়ানো চুলবিশিষ্ট, যেন শানুআ গোত্রের একজন লোক। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি ‘ঈসা (‘আঃ)-এর দেখা পেয়েছি। অতঃপর তিনি তাঁর চেহারা বর্ণনা করে বলেছেন, তিনি হলেন মাঝারি গড়নের গৌর বর্ণবিশিষ্ট, যেন তিনি এই মাত্র হাম্মামখানা থেকে বেরিয়ে এসেছেন। আর আমি ইব্রাহীম (‘আঃ)-কেও দেখেছি। তাঁর সন্তানদের মধ্যে আকৃতিতে আমিই তার অধিক সদৃশ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, অতঃপর আমার সামনে দুটি পেয়ালা আনা হল। একটিতে দুধ, অপরটিতে শরাব। আমাকে বলা হলো, আপনি যেটি ইচ্ছা গ্রহণ করতে পারেন। আমি দুধের বাটিটি গ্রহণ করলাম আর তা পান করলাম। তখন আমাকে বলা হলো, আপনি ফিত্রাত বা স্বভাবকেই গ্রহণ করে নিয়েছেন। দেখুন! আপনি যদি শরাব গ্রহণ করতেন, তাহলে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৪৩৭)
সুতরাং আমরা শবে বরাত তথা ভাগ্য রজনীর রাত থেকে কখনোও আলাদা হবোনা ইনশাআল্লাহ। এই রাত্রি হোক সবার জীবনের ভাগ্য পরিবর্তনের রাত, আমিন।